বিবিসি বিশ্লেষণ

ভূমিকম্পের কথা আগে থেকে মানুষ জানতে পারবে?

বিশ্ববাসীকে আতংকিত করার মত যতগুলো প্রাকৃতিক দূর্যোগ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম বিভীষিকাময় ধ্বংসযজ্ঞের মত পরিস্থিতি সৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে ভূমিকম্প। এটি এমন এক দূর্যোগ যা সংঘটিত হওয়ার আগে মিলে না কোনো পুর্বাভাস। কোনো ধরনের সতর্কতা ছাড়াই হঠাৎ ভূমিকম্প আঘাত করে। সম্প্রতি তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আঘাত করা দু'টি বিধ্বংসী ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষ হারিয়েছেন তাদের জীবন। পাশপাশি আহত ও আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন অসংখ্য মানুষ। 

চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে সাত দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্পে যখন তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তের মানুষের মাথার ওপর বাড়িঘর ভেঙে পড়ছিল, তখন দেশটির বেশিরভাগ মানুষ ছিলেন ঘুমে আছন্ন।

বড় কোনো দুর্যোগ আসার পুর্বাভাস  বা ইঙ্গিত পাওয়া যায় এমন সেমিওলজিস্ট বা এধরণের সংকেত নিয়ে যারা কাজ করেন, তারা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা সংবেদনশীল যন্ত্রগুলোর মাধ্যমে কিছুটা আগাম তথ্য পাওয়ার প্রচেষ্টায় অবশ্য থাকেন।

দেখা গেছে, প্রথম দফা ভূমিকম্পের ফলে তৈরি হওয়া ভূকম্পন সারা বিশ্বকে নাড়া দেয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর সাত দশমিক পাঁচ মাত্রার বড় আকারের দ্বিতীয় ভূমিকম্প আঘাত হানে। উভয় ক্ষেত্রেই ভূমিকম্প আপেক্ষিকভাবে অগভীর – এ কথাটির অর্থ হলো, কম্পনের তীব্রতা অনেক বেশি ছিল। পরে আফটারশকের ফলে অঞ্চলটিতে ক্রমাগত কম্পন শুরু হলে সেখানকার বেঁচে যাওয়া বাসিন্দা ও উদ্ধারকর্মীদের ভূমিধস এবং পায়ের নিচ থেকে ভূমি সরে যাওয়ার মতো ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপের বিশেষজ্ঞরা।

তবে তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তের দু'পাশে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সাহায্য প্রদানের জন্য যখন বিশ্ব ছুটছে, তখন কেউ কেউ ভাবছিলেন, কেন আমরা আগে থেকে এটা বুঝতে পারিনি।

পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্ট সিস্টেমের যেস্থানে ভূমিকম্প হয়েছিল সেটি টেকটোনিক তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলের একটি অংশ। এখানে আনাতোলিয়া, আরব এবং আফ্রিকা প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে থাকে।

ইতিহাস বলচহে, অঞ্চলটিতে ১৯৭০ সাল থেকে ছয় বা তার বেশি মাত্রার মাত্র তিনটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে এবং অনেক ভূতত্ত্ববিদরাই বিশ্বাস করতেন যে অঞ্চলটিতে একটি বড় ভূমিকম্প হওয়া ‘বাকি’ ছিল।

প্রশ্ন আসে- তাহলে কেন তারা আগে থেকেই সেটা বুঝতে পারেননি?

আদৌ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব?

বাস্তবতা হলো, বৈজ্ঞানিকভিত্তিতে আগে থেকেই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া খুবই কঠিন।

যদিও একটি ঘটনা ঘটে যাবার পর প্রায়শই ভূকম্পনজনিত ডেটা বা তথ্যে মিনিটের সংকেত শনাক্ত করা যায়, তবে কী অনুসন্ধান করতে হবে সেটা উপলব্ধি করা এবং পূর্বাভাস দেয়ার জন্য এটির ব্যবহার বেশি চ্যালেঞ্জিং।

ইতালির রোমের সেপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞানে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস ম্যারোন বলেন, "যখন আমরা পরীক্ষাগারে ভূমিকম্পের পরীক্ষা চালাই তখন আমরা এসকল ব্যর্থতা দেখি- যেখানে প্রথমে কিছু ফাটল এবং কিছু ত্রুটি দেখা যায়।"

"কিন্তু প্রকৃতিতে অনেক অনিশ্চয়তা থাকায় আমরা প্রায়শই বড় ভূমিকম্প হতে যাচ্ছে এমন কোনো ইঙ্গিত পাই না।"

১৯৬০ সাল থেকে ভূতত্ত্ববিদরা ভূমিকম্পের আগাম বার্তা পেতে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহারের চেষ্টা করেও সামান্য সফলতাই পেয়েছেন। ক্রিস ম্যারোন বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর কারণ হল বিশ্বের বিভিন্ন দিক দিয়ে যাওয়া চ্যুতিগুলোর জটিলতা।

এছাড়াও পৃথিবীর অভ্যন্তরে অনবরত সংঘর্ষের কারণে প্রচুর পরিমাণে সৃষ্ট শব্দ এবং গর্জন হতে থাকায় সঠিক বিষয়টি পরিমাপ বেশ কষ্টসাধ্য। অন্যদিকে আবার রাস্তার ট্র্যাফিক, নির্মাণ কাজ ও নানা দৈনন্দিন জীবনের কোলাহলের সাথে মিশ্রিত হয়ে যাওয়ায় সেখান থেকে ভূমিকম্পের স্পষ্ট সংকেত বাছাই করা কঠিন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, একটি সত্যিকারের ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় জরুরি- এটি কোথায় ঘটবে, কখন ঘটবে এবং কত বড় আকারের হবে।

সংস্থাটি বলছে, এখন পর্যন্ত কেউই নিশ্চিতভাবে তা করতে পারে না। তার বদলে ভূতত্ত্ববিদরা তাদের সেরা অনুমান দিয়ে 'প্রাকৃতিক বিপদ মানচিত্র' তৈরি করে, যেখানে তারা কয়েক বছরের সময়সীমার মধ্যে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা হিসেব কষে থাকেন। এগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় তোলা দালানের মান উন্নতের পরিকল্পনায় কিছুটা সাহায্য করলেও জনসাধারণকে সরিয়ে নেয়া বা নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার মতো প্রাথমিক সতর্কতা নিতে প্রয়োজনীয় পূর্বাভাস দিতে অক্ষম। 

তাছাড়া ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে থাকা সব বাসিন্দার প্রচুর পরিমাণে কম্পন সহ্য করতে পারা প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মানের সামর্থ্যও নেই। 

ম্যারোন বলেন, "তুরস্ক এবং সিরিয়ায় এমন অনেক বিষয় ছিল যার ফলে ভবনগুলো একরকম ভেঙ্গে পড়ার অবস্থায় ছিল”।

"পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশের ভূকম্পন কোড রয়েছে যা ১৯৭০ এবং ৮০’র দশকে প্রয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু সেভাবে ভবন তৈরি করতে কিংবা পুরনো ভবনে নতুন পদ্ধতি যুক্ত করতে অনেক খরচ হয়।"

তাই এর পরিবর্তে বিজ্ঞানীরা ভূমিকম্পের পূর্বাভাস বের করতে আরও সঠিক উপায় খুঁজছেন। ভূকম্পনের সতর্কতার পাশাপাশি প্রাণীদের আচরণ থেকে শুরু করে পৃথিবীর উপরের বায়ুমণ্ডলে বৈদ্যুতিক বিশৃঙ্খলা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় গবেষকরা এসংক্রান্ত সূত্র খুঁজছেন।

মেশিন-লার্নিং অ্যালগরিদম বা গাণিতিক পরিভাষাগুলো অতীতের ভূমিকম্প সংশ্লিষ্ট নাবিধ তথ্য ঘেটে প্রচুর পরিমাণে উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এমন নমুনা অনুসন্ধান করে যা ভবিষ্যতে এসব ঘটনার পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ম্যারোন বলেন, "এই ধরনের মেশিন-লার্নিং অ্যালগরিদমের পূর্বাভাস অনেক আগ্রহ তৈরি করেছে।" 

তিনি ও তার সহকর্মীরা গত পাঁচ বছর ধরে এমন গাণিতিক পরিভাষা তৈরি করছেন যা কিনা পরীক্ষাগারে কৃত্রিম ভূমিকম্পের ত্রুটি শনাক্তে সক্ষম। মুষ্টি আকারের গ্রানাইটের টুকরো ব্যবহার করে তারা পুনরায় চাপ ও ঘর্ষণ তৈরি করেন যা একটি চ্যুতিতে ঘটতে পারে। ফল্ট বা চ্যুতি ফসকে না যাওয়া পর্যন্ত এই চাপ তৈরি করা হয়, যাকে তারা বলেন "ল্যাবকোয়েক্স”।

এ প্রসঙ্গে ম্যারোনের মত- "স্থিতিস্থাপক তরঙ্গগুলো চ্যুতির মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে যাতে এটি ধীরে ধীরে ভেঙে যায়,"।

আরও বলেন, "স্থিতিস্থাপক বৈশিষ্ট্যের এই পরিবর্তন এবং চ্যুতি অঞ্চলে ফোরশক বা মৃদু কম্পন থেকে আসা শব্দের উপর ভিত্তি করে পরীক্ষাগারে কখন চ্যুতি ঘটবে তা আমরা আগেই বলতে পারি। এটিকে আমরা পৃথিবীতেও প্রয়োগ করতে চাই, তবে এখন পর্যন্ত সেই সক্ষমতা হয়নি।"

তিনি বলেন, "কিছু ক্ষেত্রে মানুষ ভূমিকম্পের পর কীভাবে পরবর্তী পূর্বাভাস দেয়া যায় তা খুঁজে বের করেছে, ধারনা করা হয়, এটি কাজ করতে পারে," বলেন ম্যারোন। "কিন্তু এখনও এতে বড় কোনো অগ্রগতি হয়নি।"

দেখা যায়, প্রথম ভূমিকম্পের সময় তুরস্ক ও সিরিয়ার ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া অনেকেই বিছানায় ছিলেন। এর সঙ্গে সাদৃশ রয়েছে এমন একটি তথ্য এনে বেইজিংয়ের ভূমিকম্প পূর্বাভাস ইনস্টিটিউটে জিং লিউয়ের একটি দল বলছে যে এটি ২০১০ সালের এপ্রিলে ক্যালিফোর্নিয়ার বাজাতে হয়ে যাওয়া ভূমিকম্পের সাথে কিছুটা মিল আছে। সেসময় ভীমিকম্প আঘাত হানার ১০ দিন আগে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের উপরে বায়ুমণ্ডলীয় ইলেকট্রনগুলিতে বিশৃঙ্খলা দেখা গিয়েছিল। 

ইসরায়েল ভিত্তিক আরেকটি দল সম্প্রতি দাবি করেছে যে মেশিন-লার্নিংয়ের মাধ্যমে তারা গত ২০ বছরের আয়নমন্ডলে ইলেকট্রনের পরিবর্তন পরীক্ষা করে ৮৩শতাংশ নির্ভুলতার সাথে ৪৮ ঘন্টা আগেই বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হয়েছে।

পৃথিবীর আয়নমন্ডলে বৈদ্যুতিক অসঙ্গতি নিরীক্ষণে ২০১৮ সালে চায়না সিসমো-ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক স্যাটেলাইট (সিএসইএস) চালু করেছে চীন। গত বছর বেইজিংয়ে চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টারের বিজ্ঞানীরা দাবি করেন যে ২০২১ সালের মে মাসে ও ২০২২ সালের জানুয়ারিতে চীনা মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানার ১৫ দিন আগে আয়নমন্ডলে ইলেকট্রনের ঘনত্ব কমে গেছে।

চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টারের গবেষক মেই লি বলেন, "ভূত্বক এবং দুই স্তর উপরের বায়ুমণ্ডল এবং আয়নমন্ডলের মধ্যে একটি শক্তির স্থানান্তর ঘটতে পারে। কিন্তু তিনি বলেছেন এটি ঘটার প্রক্রিয়াটি এখনও পর্যন্ত বিতর্কিত এবং তিনি সতর্ক করেছেন, স্যাটেলাইটের তথ্য দিয়েও আসন্ন ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়ার সক্ষমতা থেকে তাদের অনুসন্ধান এখনও বেশ দূরে।

"আসন্ন ঘটনা কোথায় ঘটবে তার সঠিক অবস্থান আমরা এখনও নির্দিষ্ট করতে পারি না," এটির ফলাফল বিষয়ে এক গবেষণায় বলেন গবেষকরা।

মিজ লি বলেন- বড় ভূমিকম্পগুলো তাদের কেন্দ্রস্থল থেকে অনেক দূরের আয়নমন্ডলেও পরিবর্তন আনতে পারে, যার ফলে সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করা আরও কঠিন।

তিনি বলেন, "আয়নমন্ডলের অসংগতি একটি ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের পাশাপাশি অন্য গোলার্ধে চৌম্বকীয়ভাবে সংযোজিত বিন্দুর চারপাশে উপস্থিত হতে পারে, যা আসন্ন ঘটনার অবস্থান নিশ্চিত করা আরও কঠিন করে তোলে"।

তবে অনেক গবেষকরা বিভিন্ন সংকেতের উপর ভরসা করছেন। জাপানে কেউ কেউ পূর্বাভাসের জন্য ভূমিকম্প অঞ্চলের উপরে জলীয় বাষ্পের পরিবর্তন সম্ভব বলে দাবি করেন। পরীক্ষাগুলোতে দেখা যায়, এই পূর্বাভাসের ৭০ শতাংশ নির্ভুল, যদিও তারা কেবল বলতে পারেন যে পরের মাসে যে কোনো সময়ে ভূমিকম্প হতে পারে। অন্যরা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে মিনিটের তরঙ্গ যা ভূমিকম্পের আগে ঘটতে পারে, সেটিও ব্যবহারের চেষ্টা করছেন গবেষকরা।

কিন্তু এসব দাবি সত্ত্বেও, ভূমিকম্প হওয়ার আগে কোথায় এবং কখন হবে তা কেউই সফলভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম হয়নি।

ম্যারোন বলেন "কোনো ত্রুটি নিরীক্ষণের জন্য আমরা ল্যাবে যে ধরণের সিসমোমিটার ব্যবহার করি তার সেট স্থাপনের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলার কে দেবে? আমরা জানি কিভাবে পরীক্ষাগার ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিতে হয়, কিন্তু আমরা জানি না এগুলো সত্যিই বাস্তব-বিশ্বের জটিল চ্যুতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না৷ উদাহরণস্বরূপ, পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্টটি বিশ্বের একটি জটিল অঞ্চলে রয়েছে - যা একটি সাধারণ ফল্ট বা চ্যুতি নয় বরং এখানে একগুচ্ছ জিনিস একসাথে আসছে।"

তিনি বলেন, “তারা আগে থেকেই আবহাওয়ার কিছু বড় ঘটনাতে বেশ যথাযথ পূর্বাভাস দেয়,” এটি সরকারী সংস্থাগুলোকে হারিকেনের মতো সময়ে জরুরী ভিত্তিতে প্রস্তুত করে এবং জনসাধারণের জন্য সতর্কতা জারি করে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সহায়তা করে। 

তবে একটি ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আরও তাৎক্ষণিক ভূমিকা পালন করতে পারে, তা হলো ভূমিকম্পের ঠিক পরবর্তী ঘটনাগুলোর বিষয়ে। চীনের তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয় এবং রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা উপগ্রহের মাধ্যমে ধারণ করা চিত্র থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট ক্ষতিকে শ্রেণিবিন্যাস করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে এমন সরঞ্জাম তৈরি করছেন যাতে সরকার এবং উদ্ধারকারী দলগুলোকে যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, সেখানে পাঠানো সম্ভব হয়। 

এটি অ্যালগরিদম বা গাণিতিক পরিভাষা ব্যবহার করে ভবনের ক্ষতির মূল্যায়নের সঙ্গে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়া বা সম্ভাব্য বিপজ্জনক কাঠামো শনাক্তকরণে সহায়ক হতে পারে।

আশা করা হচ্ছে যে মেশিন-লার্নিং অ্যালগরিদমগুলো একটি বড় ভূমিকম্পে পরবর্তী অবস্থার ক্ষেত্রে আরও ভালভাবে পূর্বাভাস দিয়ে উদ্ধার কর্মীদের এবং ভূমিকম্প থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে৷ 

ম্যারোন বলেন, ‘’একটি বড় ঘটনার পরে কী ঘটে এবং কেন আফটারশক হয় সে সম্পর্কে আমাদের খুব ভাল ধারণা রয়েছে।" 

তিনি বলেন, "তবে এটি এখনও সম্পূর্ণ নয়। আমরা বৈজ্ঞানিকভাবে আরও ভালভাবে জানতে পেরেছি যে ছোট ধাক্কাগুলো আরও বড় আকারের ধাক্কার দিকে নিয়ে যেতে পারে, তবে অনিশ্চয়তা সবসময়ই থাকে।"

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //